‘CAA হবেই, ঠেকাতে পারবে না কেউ’, বাংলায় দাঁড়িয়ে মমতাকেই যেন বার্তা দিলেন শাহ

২০১৯ সালের শেষ লগ্নে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ পাশ হয়েছিল সংসদে। তবে তারপর থেকে চার বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য তা কার্যকর করতে পারেনি। এর আগে ২০১৯ সালে এই আইন আসার পর দেশ জুড়ে আন্দোলন দেখা গিয়েছিল। বহু জায়গায় আগুন জ্বলেছিল। অশান্তি ছড়িয়েছিল বাংলাতেও। এরই মাঝে সিএএ-র বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেছিলেন, এই রাজ্যে সিএএ এবং এনআরসি কোনও ভাবেই হতে দেবেন না তিনি। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসতেই ফের সিএএ নিয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলায় এসে বিজেপির দলীয় বৈঠকে শাহের স্পষ্ট বার্তা, সিএএ দেশের আইন, তা কার্যকর হবেই। এই আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। (আরও পড়ুন: আরও দ্রুত ছুটবে বন্দে ভারত, দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পে ৭ লাখ কোটি খরচ করবে রেল)

আরও পড়ুন: মোদীর হ্যাটট্রিক হবে? INDIA-NDA দ্বৈরথে এগিয়ে কে? যা জানাল জনমত সমীক্ষা

আরও পড়ুন: এই প্রথম! পাক নির্বাচনে মনোনয়ন জমা হিন্দু তরুণীর, গতবছরই পাশ করেন ডাক্তারি

রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলবে কলকাতায় বিজেপির আইটি সেলের এক বৈঠকে সিএএ নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সময় নাকি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে অমিত শাহ বলেন, ‘সিএএ দেশের আইন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে এই নিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। আমাদের দল সিএএ কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর।’ এদিকে গত বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের লক্ষ্য স্থির করে ৭৭-এ আটকাতে হয়েছিল বিজেপিকে। আর এবার লোকসভা নির্বাচনে ৩৫ আসনের লক্ষ্য স্থির করে এগোচ্ছেন শাহ। যদি এই লক্ষ্যের ধারের কাছে বিজেপিকে পৌঁছাতে হয়, তাহলে সিএএ তাদের জন্য বড় হাতিয়ার হতে চলেছে। কারণ, সিএএ-র কারণেই বাংলার মতুয়া ভোট বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিল গতবার। এর দৌলতেই উত্তরবঙ্গ সহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। এই আবহে বিজেপির ঘরোয়া বৈঠকে সিএএ নিয়ে প্রত্যয়ী ছিলেন শাহ। বৈঠকের পর বিজেপির তরফ থেকে শাহের বক্তব্যের অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। তাতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের জন্য কাজ করতে হবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে। বাংলায় বিজেপি সরকারের অর্থ হবে গরু পাচার রুখে দেওয়া, সিএএ কার্যকর করা।’

আরও পড়ুন: পরপর হামলার জের, সাগরে ব্রহ্মোস মিসাইল বহনকারী ৪টি রণতরী মোতায়েন করল নৌসেনা

উল্লেখ্য, বিগত নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভালো ফলের নেপথ্যে একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল মতুয়াদের সমর্থন। এবং সিএএ-র প্রতিশ্রুতির মাধ্যমেই সেই সমর্থন পেয়েছিল বিজেপি। তবে সংসদে আইন পাশ করেও তা কারযকর করতে সক্ষম হয়নি মোদী সরকার। রেকর্ড সংখ্যক বার আইন কার্যকর করার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সবের মাঝেই প্রশ্ন উঠেছে, সিএএ কি আদৌ কার্যকর কর সম্ভব? অবশ্য, বঙ্গ বিজেপির নেতারা থেকে থেকেই দাবি করে এসেছেন, সিএএ আসবেই। কেউ কেউ আবার সময়সীমাও দিয়ে দেন তা নিয়ে। তবে আদতে সিএএ এখনও কার্যকর হয়নি। কবে হবে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না অমিত শাহ নিজেও। এর আগে শাহ দাবি করতেন, ‘কোভিড যাক, নিয়ম বানিয়ে কার্যকর করা হবে সিএএ’। এদিকে কোভিড চলে গিয়ে স্বাভাবিক হয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। তবে সিএএ-র নিয়ম এখনও তৈরি হয়েছে কি না, তা জানেন না সাধারণ দেশবাসী। তবে শাহের দাবি, সিএএ কার্যকর হবেই। আর শাহের এই বক্তব্যকে পালটা হাতিয়ার করে প্রচারে নামতে পারে তৃণমূলও। তবে বাংলায় আসন্ন লোকসভা ভোটে যে সিএএ বড় ইস্যু হতে পারে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল বর্ষশেষে।