‘বেসুরো’ অনুপমের পদ কাড়লেন নড্ডা, সরানো হল জাতীয় সম্পাদকের জায়গা থেকে

দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একেবারে খড়্গহস্ত ছিলেন তিনি। সম্প্রতি পৌষমেলাতে কোণঠাসা বিজেপি কর্মীদের নিয়ে স্টলও বানিয়েছিলেন। এবার সেই অনুপম হাজরাকে জাতীয় সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। সূত্রের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা অনুপমকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেন। এখনই এই সিদ্ধান্ত লাগু করার ব্যাপারে বলা হয়েছে।

২০২০ সাল থেকে তিনি এই পদে ছিলেন। এতদিনে সেই পদটাও গেল অনুপমের।

তবে এই ঘটনা যে একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল এমনটাও নয়। এতদিন যেভাবে প্রকাশ্য়ে দলের একাংশের বিরুদ্ধে মুখ খুলছিলেন তিনি তাতেই বোঝা যাচ্ছিল তাঁকে সরানো শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর মঙ্গলবারই কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে. অনুপম হাজরা সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে নালিশ গিয়েছিল জেপি নড্ডার কাছে। এরপরই তিনি এনিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী অবিলম্বে নির্দেশ লাগু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পরেই শোরগোল পড়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। এদিকে অনুপমের সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে বলেও একাংশের মত। সেক্ষেত্রে অনুপম হাজরা এবার তৃণমূলে যোগ দেন কি না সেটাই দেখার। তবে গোটা ঘটনায় তৃণমূল কিন্তু উল্লসিত। অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পর থেকেই বীরভূম তৃণমূল কিছুটা দিশেহারা। তবে কি এবার অনুপমকে দলে টেনে শূন্যস্থান পূরণ করবে ঘাসফুল শিবির?

তবে এনিয়ে অনুপম হাজরা বা তৃণমূল নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে বিজেপির মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ দলে থেকে কীভাবে অনুপম এভাবে প্রকাশ্য়ে কটাক্ষ করতে পারছিলেন, সমালোচনা করতে পারছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। তবে অনুপম বরাবরই চোরমুক্ত বিজেপি গড়ার ডাক দিতেন। কিন্তু চোরমুক্ত বিজেপি গড়ার কাজে নেমে তিনি কি এবার তৃণমূলে যাবেন? কিন্তু সেখানেও তো ভুরি ভুরি চুরির অভিযোগ।

তবে ভবিষ্যৎ যাই হোক, আপাতত পদ খোয়ালেন অনুপম। তবে এরপর অনুপম কী বলেন, কোন ঘাটে নৌকা ভেড়ান সেটাই এখন দেখার। তবে কি লোকসভায় তৃণমূলের একটা টিকিট নিজের জন্য নিশ্চিত করার জন্য়ই এসব করলেন অনুপম?

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বীরভূম তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তাঁর কথাকে বিশেষ আমল দিতে না চাইলেও ইদানিং যেভাবে বিক্ষুব্ধরা অনুপমের ছাতার তলায় আশ্রয় নিচ্ছিলেন তাতে অশনি সংকেত দেখছিল দল। দলের অন্দরে অস্বস্তিও বাড়ছিল। একজন জাতীয় সম্পাদক হয়ে কীভাবে তিনি একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করতে পারেন, ফেসবুকে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। তবে শেষ পর্যন্ত পদটাও গেল তাঁর।