‘‌কথা মানে কথাই’‌, মিডিয়াকে বয়কটের সিদ্ধান্ত মদন মিত্রের, কেন এমন পদক্ষেপ?‌

মদন মিত্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল মিঠে–কড়া। কখন আবেগমাখা কন্ঠে মানুষকে আলিঙ্গন করা, কাছে টেনে নেওয়া। আবার কখনও কড়া কথা বলে হাওয়া গরম করতে দেখা যায় তাঁকে। তবে এই মদন মিত্রকে অনেকেই গরিবের বাবা–মা বলে সম্বোধন করে থাকেন। এবার কামারহাটির এই বিধায়ক কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমকে বয়কট করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কালারফুল নেতা। কিন্তু কেন এমন করলেন?‌ দলের নির্দেশেই এই কড়া পদক্ষেপ করলেন কামারহাটির বিধায়ক।

ঠিক কী বলেছেন মদন মিত্র?‌ রবিবার রাতের এক অনুষ্ঠানে মদন মিত্র বলেন, ‘‌দলের নামে শপথ করছি কোনও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কেমন আছেন, ভালো আছেন এইসব প্রশ্নের বাইরে আলাদা করে কোনও বাইট দেব না। দেব না মানে দেব না। কথা মানে কথাই। যা বলার তা ইনস্টা, ফেসবুকেই বলব। সাংবাদিক বন্ধুদের বলব আমাকে ভুল বুঝবেন না। আপনাদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব অটুট রইল। শুধু আমার কাছে মাইক নিয়ে কিছু বলতে বলবেন না। যদি বলেন কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদে মদন মিত্র নামটা এমন একটা নাম যে আমার প্রচারের কোনও প্রয়োজন নেই।’‌

কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মদন?‌ সূত্রের খবর, মদন মিত্রকে ইদানিং পার্থ–অনুব্রত নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। সেটা দলের পছন্দ নয়। আর সে কথা জানতে পেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মদন মিত্র। তবে কামারহাটির বিধায়ক বলেন, ‘‌প্রথমেই বলি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের কথা। এদের বিরুদ্ধে কী হবে, কী হবে না তা বিচারব্যবস্থাই বলবে। আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটুকু বলব, এদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমার সম্পর্ক ছিল। আমার কোনও মন্তব্যে এদের আঘাত করার মানসিকতা ছিল না। কিন্তু একটি বিবৃতিকে কেন্দ্রে করে এমনভাবে কিছু কথা বেরিয়েছে যাতে বোঝা যাচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে আমি পার্থ বা অনুব্রতকে বিড়ম্ববনায় ফেলে আঘাত করার চেষ্টা করেছি। সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের বলব, কিছুদিন অন্তত আপনারা আমাকে আপনাদের সংবাদমাধ্যমের বাইরে থাকতে দিন। আমি যেসব প্রোগ্রাম করি সেইসব প্রোগ্রামে আপনারা আসবেন, কভার করবেন। সংবাদমাধ্যমে মন্তব্যের জন্য দল যদি অস্বস্তিতে পড়ে তাহলে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’‌

উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির জেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন প্রেসিডেন্সি জেলে। তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইডি। আর গরুপাচার মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছে অনুব্রত মণ্ডলকে। এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। নানা প্রশ্ন ধেয়ে আসছে প্রত্যেকদিন। যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিধায়ক থেকে সাংসদদের। এসবের জবাব দিয়েছিলেন মদন মিত্র। তাতে দলের ভাবমূর্তিতে খানিকটা আঘাত লাগে। যা জানানো হয়েছে এই কালারফুল নেতাকে। তাই মিডিয়া বয়কটের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।