রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে ফিরছেন রাজীব কুমার, এত দেরি হল কেন?

ফের রাজ্য পুলিশের ডিজিপি পদে বসলেন রাজীব কুমার। লোকসভা ভোট পর্বের মধ্য়ে নির্বাচন কমিশন তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিল। ফের তাঁকে স্বপদে ফেরত আনল রাজ্য সরকার। এনিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে একটি নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। 

সেই নোটিফিকেশনে উল্লেখ করা হয়েছে আইপিএস রাজীব কুমার বর্তমানে অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি  ইনফরমেশন টেকনোলজি ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ছিলেন তিনি। সেই রাজীব কুমার এবার রাজ্য় পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল ও ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ পদে বহাল হবেন। রাজ্যপালের নির্দেশ মোতাবেক এটা কার্যকরী হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে নোটিফিকেশনে। 

এবার প্রশ্ন কেন রাজীব কুমারকে স্বপদে ফেরাতে এতটা দেরি করল সরকার? 

সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে অন্তত চারটি আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল। সেকারণে সেখানে নির্বাচনী আচরণ বিধি লাগু করা ছিল। সেই নিরিখে এই রদবদল করা যাচ্ছিল না। আর উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরেই আর দেরি করেনি রাজ্য সরকার। দ্রুত ওই পদে ফিরিয়ে আনা হল রাজীব কুমারকে। 

এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বরাবরই মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের গুডবুকে রয়েছেন আইপিএস রাজীব কুমার। রাজীব কুমারকে ঘিরে অতীতে নানা বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কিন্তু তারপরেও রাজ্য সরকার তাঁর পাশ থেকে সরেনি কখনও। সেই রাজীব কুমারকে নিয়ে নানা সময় নানা অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তবে এবার সেই রাজীব কুমারকেই ফিরিয়ে আনা হল ডিজিপি পদে। 

এর আগে সন্দেশখালিকাণ্ড যখন তুঙ্গে তখন রাজীব কুমারকে নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছিলেন, রাজীব কুমার তো এখন শুধু পুলিশ দেখছে না। তৃণমূলটাকেও দেখছেন। পিসি ভাইপোর দূরত্বও কমিয়ে এনেছেন রাজীব কুমার।  সংবাদমাধ্য়মের সামনে এভাবেই তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নিশানা করেছিলেন। 

এদিকে এর আগে রাজীব কুমারকে যখন ভারপ্রাপ্ত ডিজির পদে বসানো হয়েছিল তখন তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন কুণাল ঘোষ। কুণাল বলেছিলেন, রাজীব কুমার একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার। মাঝখানে কিছু টানাপোড়েন গিয়েছিল। কিছু নির্দিষ্ট কারণে ওর সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় দেখা হয়েছিল। সৌজন্য বিনিময় হয়। আমি ওঁকে ভালো থাকতে বলি। উনিও আমাকে ভালো থাকতে বলেন। উনি ডিজি পদে এসেছেন। নিশ্চয়ই ভালো খবর। একদন দক্ষ IPS অফিসার তিনি। ভালো থাকুন ভালো কাজ করুন। শুধু খেয়াল রাখুন আমার মতো কোনও নির্দোষকে কারও নির্দেশে বলি দিতে যাবেন না যেন। তাহলে পরের দিনগুলি ভালো দেন না ভগবান।

শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন সারদার প্রমাণ লোপাটের জন্য রাজীব কুমারকে পুরষ্কৃত করা হল। আসলে বিরোধীরা আগেই অভিযোগ করেছিলেন রাজীব কুমারের নেতৃত্বেই সারদার প্রমাণ লোপাট করেছিল SIT। এর তা নিয়ে কম টানাপোড়েন হয়নি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছিল রাজীব কুমার নথিপত্র সরিয়ে দিয়েছেন। সিবিআই রাজীবের বাড়িতে পৌঁছলে তাঁকে ‘রক্ষা’ করতে ময়দানে নেমে পড়েছিলেন খোদ মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তিনি রীতিমতো ধর্নায় বসে পড়েছিলেন।

সেই রাজীব কুমার ফের বসবেন রাজ্য পুলিশের ডিজির পদে।